নষ্ট নারী – wasted woman

এই শব্দটির ব্যবহার কেবল নারীদের ক্ষতি করে না বরং সমাজের সামগ্রিক অগ্রগতিকেও বাধাগ্রস্ত করে।

শব্দটির উৎপত্তি ও ব্যবহার:

ঐতিহাসিকভাবে, “নষ্ট নারী” শব্দটি এমন নারীদের বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হত যারা যৌনতাপূর্ণভাবে সক্রিয় ছিলেন,

বিবাহবিচ্ছেদপ্রাপ্ত ছিলেন, বিধবা ছিলেন, পতিতা ছিলেন, অথবা অন্য কোনোভাবে ঐতিহ্যবাহী নারীত্বের ধারণার বাইরে ছিলেন।

এই নারীদেরকে নৈতিকভাবে নিকৃষ্ট ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে দেখা হত।

আধুনিক সমাজেও, এই শব্দটি প্রায়শই অপমান ও ঘৃণার সাথে ব্যবহৃত হয়।

এটি এমন নারীদের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে যারা তাদের পোশাক, আচরণ অথবা জীবনধারার মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী নিয়মকানুন লঙ্ঘন করে।

শব্দটির ক্ষতিকর প্রভাব:

“নষ্ট নারী” শব্দটির ব্যবহার নারীদের উপর ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে রয়েছে:

বৈষম্য ও সহিংসতা: এই শব্দটি নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও সহিংসতাকে ন্যায়সঙ্গত করতে ব্যবহৃত হয়।

যারা “নষ্ট নারী” হিসেবে লেবেল করা হয় তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, এমনকি হত্যার ঝুঁকি বেশি থাকে।

সামাজিক বর্জন: এই শব্দটি ব্যবহার করে নারীদের সমাজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাদের পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সম্প্রদায় তাদের ত্যাগ করে।

এর ফলে তারা মানসিক বিষণ্ণতা, একাকীত্ব ও অসহায়ত্বের শিকার হতে পারেন।

আত্ম-সম্মানের অভাব: “নষ্ট নারী” হিসেবে লেবেল করা নারীদের আত্ম-সম্মানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

তারা নিজেদেরকে অপমানিত ও অযোগ্য বলে মনে করতে পারে। এর ফলে তাদের জীবনের বিভিন্ন দিকে প্রভাব পড়তে পারে।

নারীর ক্ষমতায়ন রোধ: এই শব্দটি নারীদের ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে।

নারীদের নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করা, তাদের অধিকার দাবি করা এবং সমাজে সমান অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখে।

উদাহরণ:

সাহিত্যে: বাংলা সাহিত্যে আমরা “নষ্ট নারী” চরিত্রের অনেক উদাহরণ পাই।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “নবকল্লোল” উপন্যাসের মীনাক্ষী, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “দেবদাস” উপন্যাসের চন্দ্রমুখী