Description
যেভাবে নবজাতকের যত্ন নিতে হবে । নবজাতকের আগমন পরিবারে এক অপূর্ব আনন্দ এনে দেয়। কিন্তু এই ছোট্ট প্রাণীর যত্ন নেওয়াও একটি বড়ো দায়িত্ব। নবজাতকের সুস্থতা ও ভালো বেড়ে ওঠার জন্য, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা জরুরি।
পড়ুনঃ মোটা হওয়ার ইন্ডিয়ান গুড হেলথ কিনতে এখনই ক্লিক করুন
যেভাবে নবজাতকের যত্ন নিতে হবে
খাদ্য:
- মায়ের দুধ: নবজাতকের জন্য সর্বোত্তম খাবার হলো মায়ের দুধ। এতে থাকে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধই শিশুর জন্য যথেষ্ট।
- শিশুর দুধ: যদি কোনো কারণে মায়ের দুধ খাওয়ানো সম্ভব না হয়, তাহলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর দুধ খাওয়ানো যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ধরণের শিশুর দুধ পাওয়া যায়। শিশুর বয়স ও চাহিদার সাথে মানানসই দুধ নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ।
- খাওয়ানোর সময়সূচী: নবজাতককে প্রথম কয়েক মাস, ২-৩ ঘন্টা অন্তর খাওয়ানো উচিত। তবে, প্রতিটি শিশুর খাওয়ার চাহিদা আলাদা হতে পারে। শিশু যদি বেশি ক্ষুধার্ত বোধ করে, তাহলে তাকে বারবার খাওয়ানো যেতে পারে।
- বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি: সঠিকভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মা শিশুকে কোলে নিয়ে এমনভাবে বসুন যাতে শিশুর মুখ মায়ের স্তনের সাথে লেগে থাকে। শিশুর ঠোঁট ও নাক স্তনের উপর আসবে। শিশু যেন সম্পূর্ণ স্তনপট্টমুখ ধরে, তা নিশ্চিত করুন।
- বোতল দিয়ে দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি: যদি বোতল দিয়ে দুধ খাওয়ানো হয়, তাহলে বোতল ও ছাতা পরিষ্কার রাখা জরুরি। প্রতিবার ব্যবহারের আগে বোতল ও ছাতা গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। শিশুকে এমনভাবে বসিয়ে দুধ খাওয়ান যাতে তার মাথা ও ঘাড় সোজা থাকে। বোতলের ছিদ্র যেন খুব বড় বা খুব ছোট না হয়।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:
- নিয়মিত গোসল: নবজাতকের ত্বক খুবই নরম ও সংবেদনশীল। তাই, নিয়মিত সাবান ও হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করানো উচিত।
- নাভির যত্ন: নাভি পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
- পোশাক: নবজাতকের জন্য নরম ও আরামদায়ক পোশাক ব্যবহার করুন।
- নখ কাটা: নবজাতকের নখ দ্রুত বেড়ে যায়। তাই, নিয়মিত নখ কেটে নিন।
ঘুম:
- নবজাতকের ঘুমের সময়সূচী: নবজাতকেরা বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে থাকে। তবে, তাদের ঘুমের সময়সূচী অনিয়মিত হতে পারে।
- নিরাপদ ঘুমের পরিবেশ: নবজাতকের জন্য একটি নিরাপদ ও আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন।
- পাশের দিকে ঘুমানো: নবজাতককে পিঠের পরিবর্তে পাশের দিকে ঘুমানো ভালো।
স্বাস্থ্য:
- নিয়মিত চেকআপ: নবজাতকের নিয়মিত চেকআপ করানো উচিত।
- টিকা: নবজাতকের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত টিকা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- সাধারণ সমস্যা: নবজাতকের সাধারণ কিছু সমস্যা, যেমন কান্নাকাটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বর ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে রাখুন।
অন্যান্য:
- স্পর্শ: নবজাতকের সাথে নিয়মিত স্পর্শ করা তাদের মানসিক বিকাশে সহায়ক।
- বন্ধন তৈরি: আপনার
নবজাতকের যত্ন কিভাবে নিবেন
নবজাতকের যত্ন নেওয়া একটি আনন্দের অভিজ্ঞতা হলেও, নতুন বাবা-মায়েদের জন্য এটি বেশ চ্যালেঞ্জিংও হতে পারে। এই বিভাগে, আমরা নবজাতকের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রদান করব, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, পোশাক, ঘুম, স্নান, স্বাস্থ্য এবং আরও অনেক কিছু।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা আপনাকে নবজাতকের যত্ন নিতে সাহায্য করবে:
খাদ্য:
- মায়ের দুধ: মায়ের দুধ নবজাতকের জন্য সেরা খাবার। এতে শিশুর প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি উপাদান থাকে এবং এটি শিশুরোগ, সংক্রমণ এবং এলার্জির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মায়ের দুধই শিশুর জন্য যথেষ্ট।
- শিশুর দুধ: যদি কোন কারণে মায়ের দুধ খাওয়ানো সম্ভব না হয়, তবে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর দুধ খাওয়ানো যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ধরণের শিশুর দুধ পাওয়া যায় এবং প্রতিটি শিশুর জন্য উপযুক্ত দুধ নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ।
- খাওয়ানোর পদ্ধতি: নবজাতককে স্তন্যপান বা বোতল দিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। স্তন্যপান শিশুর জন্য সবচেয়ে উপকারী, তবে বোতল দিয়ে খাওয়ানোও একটি গ্রহণযোগ্য বিকল্প।
- খাওয়ানোর সময়সূচী: নবজাতককে প্রতি দুই থেকে তিন ঘন্টা অন্তর খাওয়ানো উচিত।
পোশাক:
- নরম ও আরামদায়ক পোশাক: নবজাতকের জন্য নরম ও আরামদায়ক সুতির পোশাক ব্যবহার করুন। এতে শিশুর ত্বক শ্বাস নিতে পারে এবং সে আরামে থাকতে পারে।
- ওভারড্রেসিং এড়িয়ে চলুন: শিশুদের অতিরিক্ত পোশাক পরানো উচিত নয়। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বেশি থাকে, তাই তাদের বেশি পোশাকের প্রয়োজন হয় না।
- ন্যাপি: শিশুর ন্যাপি নিয়মিত পরিবর্তন করুন যাতে সে শুষ্ক ও আরামদায়ক থাকে। ন্যাপি পরিবর্তন করার সময়, শিশুর নিতম্ব ও যৌনাঙ্গ পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখতে ভুলবেন না।
ঘুম:
- নিরাপদ ঘুমের পরিবেশ: শিশুকে একটি নিরাপদ ও আরামদায়ক বিছানায় ঘুমাতে দিন। বিছানাটি শক্ত এবং সমতল হওয়া উচিত এবং এর চারপাশে কোন নরম জিনিসপত্র বা খেলনা থাকা উচিত নয়।
- পেটের উপর ঘুমানো এড়িয়ে চলুন: নবজাতককে পেটের উপর ঘুমাতে দেবেন না। এটি শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- পাশের দিকে ঘুম: শিশুকে পাশের দিকে ঘুমাতে অভ্যস্ত করুন।
স্নান:
-
নবজাতকের স্নান:
নবজাতকের স্নান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবে এটি নতুন বাবা-মায়েদের জন্য বেশ ভীতিকরও হতে পারে। নীচে নবজাতকের স্নান করানোর বিষয়ে কিছু টিপস দেওয়া হল:
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:
- গরম জল: স্নানের জল ঈষদুষ্ণ (37-38°C) হওয়া উচিত।
- নরম তোয়ালে: শিশুকে শুকানোর জন্য একটি নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন।
- ওয়াশক্লথ বা স্পঞ্জ: শিশুর শরীর পরিষ্কার করার জন্য একটি নরম ওয়াশক্লথ বা স্পঞ্জ ব্যবহার করুন।
- শিশুর সাবান: শিশুর ত্বকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি হালকা শিশুর সাবান ব্যবহার করুন।
- শ্যাম্পু: যদি শিশুর চুল থাকে, তবে শিশুর জন্য তৈরি একটি হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
- কাপড়ের ন্যাপি: স্নানের পরে শিশুকে মুছতে একটি কাপড়ের ন্যাপি ব্যবহার করুন।
স্নান করানোর পদ্ধতি:
- একটি নিরাপদ স্থানে স্নানের ব্যবস্থা করুন: একটি পরিষ্কার ও শুষ্ক টেবিল বা বাথটবের উপরে একটি নরম তোয়ালে বিছিয়ে দিন।
- জল গরম করুন: স্নানের জল ঈষদুষ্ণ (37-38°C) তে আনুন।
- শিশুর পোশাক খুলুন: শিশুর পোশাক খুলে ন্যাপি খুলে ফেলুন।
- শিশুর মুখ পরিষ্কার করুন: একটি নরম ও ভেজা কাপড় দিয়ে শিশুর মুখ পরিষ্কার করুন। চোখ, মুখ এবং কান পরিষ্কার করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
- শিশুর শরীর পরিষ্কার করুন: শিশুর শরীরের এক অংশ ভেজা কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং তারপর একটি শুষ্ক তোয়ালে দিয়ে শুকিয়ে ফেলুন। একবারে শরীরের একটি অংশ পরিষ্কার করে নিন।
- শিশুর মাথা ধুয়ে ফেলুন: যদি শিশুর চুল থাকে, তবে শিশুর জন্য তৈরি একটি হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু চোখে পড়া এড়িয়ে চলুন।
- শিশুকে শুকিয়ে ফেলুন: স্নানের পরে শিশুকে একটি নরম তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে শুকিয়ে ফেলুন। বিশেষ করে শরীরের ভাঁজগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে ফেলুন।
- শিশুর পোশাক পরান: শিশুর পোশাক এবং ন্যাপি পরিয়ে দিন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
- স্নানের সময় কখনই শিশুকে একা রেখে যাবেন না।
- স্নানের সময় শিশুকে ঠান্ডা লাগা থেকে রক্ষা করুন।
- **শিশুর ত্বক যদি শুষ্ক বা সংবেদনশীল হয়, তবে প্রতিটি স্নানের পরে শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার কর
স্বাস্থ্য:
-
নবজাতকের স্বাস্থ্য:
নবজাতকের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। নবজাতকেরা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও পুরোপুরি বিকশিত হয়নি। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং টিকা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা:
- জন্মের পরপরই শিশুর প্রথম স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।
- এরপর নিয়মিতভাবে শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত, বিশেষ করে প্রথম বছরের মধ্যে।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং কোন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
টিকা:
- নবজাতকের জন্য বিভিন্ন ধরণের টিকা গুরুত্বপূর্ণ।
- টিকা শিশুকে বিভিন্ন মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
- বাংলাদেশ সরকার নবজাতকের জন্য বিনামূল্যে টিকা প্রদান করে।
- নিয়মিত টিকা দেওয়ার জন্য শিশুকে নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা নজরদারি করা উচিত:
- জ্বর
- কাশি
- শ্বাসকষ্ট
- ডায়রিয়া
- বমি বমি ভাব
- প্রস্রাব কম হওয়া
- খাওয়াতে অসুবিধা
- অস্বাভাবিক ঘুমের ধরণ
- বিরক্তি বা কান্না
যদি আপনার শিশুর মধ্যে এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
নবজাতকের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য কিছু টিপস:
- মায়ের দুধ: নবজাতকের জন্য মায়ের দুধ সেরা খাবার।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নিয়মিতভাবে শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।
- টিকা: নিয়মিত টিকা দেওয়ার জন্য শিশুকে নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান।
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: নবজাতকের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- হাত ধোয়া: নবজাতককে স্পর্শ করার আগে এবং পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।
- শিশুকে ধূমপানের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখুন।
- শিশুকে স্তন্যপান করানোর সময় মদ্যপান করবেন না।
নবজাতকের যত্ন নেওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে, তবে এটি একটি আনন্দের অভিজ্ঞতাও হতে পারে। উপরের নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করে আপনি আপনার নবজাতকের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে পারেন এবং তাকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে পারেন। যেভাবে নবজাতকের যত্ন নিতে হবে
কিছু অতিরিক্ত টিপস:
- শিশুর সাথে শারীরিক যোগাযোগ বজায় রাখুন।
- শিশুর সাথে কথা বলুন ও গান গাইুন।
- শিশুর যত্নে সাহায্যের জন্য পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে সাহায্য নিন।
Reviews
There are no reviews yet.